বিয়ের ক্ষেত্রে কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা

পাত্র দেখতে সুন্দর, ভাল জব করে, পারিবারিক অবস্থা ভাল কিন্তু একটু কম উচ্চতার। অর্থাৎ পাত্রী এর উচ্চতা ৫’৩” আর পাত্র এর উচ্চতা ৫’৪”। না হবেনা। বাদ। সব চেস্টা বাতিল। অথচ সব কিছু মিলেছিল।

পাত্র এর আর্থিক অবস্থা ভাল, ভাল বিজনেজ করে, শিক্ষাগত যোগ্যতা ভাল, দেখতে সুন্দর। কিন্তু পারিবারিক অবস্থাতে একটু অপছন্দনীয় বিষয় আছে। তাঁর পিতা একসময় সরকারি অফিসের পিয়ন ছিল। বাদ, হবেনা।

পাত্র এর উচ্চতা মানানসই। অর্থাৎ উচ্চতা ৫’১০”। আর পাত্রীর উচ্চতা ৫’৩”। বয়স পাত্র এর ৩৪ এবং পাত্রী এর ২৬, পড়াশুনা দুইজনেই অনার্স। একে-অপরকে মুটামুটি পছন্দ। পাত্ররা ৩ ভাই, ১ বোন আর পাত্রীরা ৪ বোন, দুইজন একই জেলার। ছেলে বিজনেজ করে, আর্থিক অবস্থা ভাল।  কিন্তু! এখানে আবার কিন্তু কিসের? কিন্তু ছেলেদের নিজস্ব বাড়ি নেই, তবে জায়গা কেনা আছে। নিজস্ব বাড়ি লাগবে, তানাহলে হবেনা। অথচ প্রথমে পাত্রী পক্ষ বলেছিল ভাল ছেলে লাগবে, আর এখন সব মিলে যাচ্ছে কিন্তু এখন নিজের বাড়ি লাগবে। বিয়ে হল না। 

ইউএসএ সিটিজেন পাত্র লাগবে। পাত্র এর বয়স ৩৩/৩৪ এর বেশি হওয়া যাবেনা। উচ্চতা কম পক্ষে ৫’৬” লাগবে। পাত্র ভাল হতে হবে, নিজ যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া লাগবে।

পাত্র পেলাম, ৩২ বছর বয়স, ইউএসএ থাকে, ব্যবসা করে, ইউএসএ এর সিটিজেন। সবকিছু মিলে যাচ্ছে, কারণ পাত্রি এর বয়স ২৬, ডাক্তার, ঢাকায় থাকে। আল-হামদুলিল্লাহ। না হবেনা।

এখন প্রশ্ন পাত্র এর বাবা-মা কি করে, ঢাকায় কি বাড়ি আছে?

পাত্র এর বাবা বর্তমানে অবসর ইউএসএ থাকে, মা বাসায় থাকে। ঢাকায় কোন বাড়ি নেই।

হবেনা, ঢাকায় বাড়ি থাকতে হবে।

পাত্রী লাগবে উত্তর বঙ্গের, তবে বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করে এমন হতে হবে। পাত্রী এর বয়স ৩০-৩২ হলেও হবে, কমপক্ষে মাস্টার্স পাস হতে হবে, সুন্দরি হতে হবে। কারণ, পাত্র এর বর্তমান বয়স ৩৬, উচ্চতা ৫’২”, এমবিএ, প্রাইভেট ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসাবে জব করেন, দেশের বাড়ি জামালপুর, থাকেন বর্তমানে ঢাকা (গুলশান-১)।

পাত্রী উত্তর বঙ্গের (শেরপুর), দেখতে সুন্দরি, ৫’২” লম্বা, মাস্টার্স পাস, বয়স ৩১, বর্তমানে থাকেন মুহাম্মদপুর। 

উভয় পক্ষের তথ্য এর পছন্দের প্রেক্ষিতে দেখার ব্যবস্থা করা হল। উভয়ের পছন্দ হল। এরপরে পাত্রী পক্ষ জানতে চাইলেন তাহলে বিয়ে কবে হবে, কি করা যায়। 

মধ্যস্থতা হিসাবে পাত্র পক্ষকে কল করা হল। উনি কল রিসিভ করছেননা, ৫ দিন/ ৭ দিন। কোন খবর নেই, কল ব্যাক করেনা।

পাত্রী পক্ষ জানতে চাইলো কি করা যায়। অপেক্ষা করতে বলা হল। বললাম, হয়তো পরামর্শ করছে। এভাবে প্রায় ১ মাস।

১ মাস পরে আবার পাত্র পক্ষকে কল করা হল, সে বললো, আমি সেদিন ভাল করে দেখিনাই, যদি আরো কিছু ঐ পাত্রীর ছবি পাঠাতেন।

তবুও হাল না ছেড়ে পাত্রী পক্ষকে জানান হল, বুঝানোর চেস্টা করা হল। অবশেষে পাত্রী পক্ষ জানাল, ঐ পাত্র এর সাথে আমাদের আর কোন আগ্রহ নেই। 

দুনিয়ার অল্প সময়ের। এটা আমাদের জন্য পরীক্ষার জায়গা। এখানে নিজের ঈমান বাঁচাতে, আমলকে সুন্দর করতে জীবন সঙ্গী প্রয়োজন। দুনিয়ার কেউ পারফেক্ট নয়, কিছু ত্রুটি থাকবেই। এভাবে চিন্তা করুন, বিয়ে সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।

আপনার বিয়ের অভিজ্ঞতা জানাবেন প্লিজ-

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.