বিয়েটা ডট কমে অনেক আগ্রহ নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার পর মনমত কোন রেস্পন্স না পেয়ে অনেকেই আর প্রোফাইলে লগইন করেন না। আর নিজে নিজে মন্তব্য করেন যে, খুঁজে পেলাম না আমার পছন্দমত কোন পাত্র বা পাত্রীকে। অথচ বন্ধু বা বান্ধবীদের কাছে অনেক সুনাম শুনে তারা বিয়েটাতে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন বা পেমেন্ট করেছিলেন কিন্তু সঠিক নির্দেশনা না পাওয়ার কারণে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
একজন সফল দম্পতির সফলভাবে বিয়েটাকে ব্যবহার করে সফল হওয়ার গল্প শুনবো এবং বিয়েটা ডট কমের এডমিনের পক্ষ থেকে কিছু পরামর্শ জানবো যাতে আমরাও সফল হতে পারি।
বিয়েটাকে ব্যবহার করে যারা সফল হয়েছিলেন তাদের মধ্যে মনি ও শুভ দম্পতির বিয়েটা ব্যবহারের গল্প আমরা আজ শুনবো।
শুভ বিয়েটা’তে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন তাঁর কয়েকজন বন্ধুর পরামর্শে। তিনি রেজিস্ট্রেশন এর পর কিছুদিন তেমন কিছু বুঝতে পারছিলেননা যে কিভাবে অপারেট করবেন। একদিন বিয়েটার হেল্পলাইন থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয় যে কিভাবে অনুরোধ পাঠাতে হয়, কিভাবে পাত্রীদের প্রথম পেজে আপনি সব সময় থাকবেন ইত্যাদি।
এরপর প্রতিদিন তিনি কিছু সময় বিয়েটা’র পিছনে ব্যয় করতে লাগলেন।
কয়েকটি পাত্রীর প্রোফাইল তিনি দেখতে পারছিলেন। তাদেরকে পছন্দও হয়েছিল। তাই তিনি একটি প্ল্যান কিনে অনুরোধ পাঠানো শুরু করলেন। এরপর উনি ভেবেছিলনে যে সাথে সাথেই হয়তো কোন পাত্রী পক্ষ উত্তর দেবে। কিন্তু তাকে পাত্রী পক্ষের উত্তর পেতে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
এভাবে কয়েকজন পাত্রীর সাথে উনি কথাও বললেন। কিন্তু তেমন পজিটিভ মনে হলনা। কয়েকজন পাত্রী ওনাকেও অনুরোধ পাঠান কিন্তু তাদের দেশের বাড়ি, বয়স আর উচ্চতা পছন্দ না হওয়াতে তিনি তাদের অনুরোধ গ্রহণ করেননি। এর পর এই প্ল্যানের মেয়াদ শেষ হলে উনি আবার আপগ্রেড করেন এবং নতুন করে আবার অনুরোধ পাঠাতে শুরু করেন।
অন্য দিকে “মনি” বিয়েটা’তে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন শুধুমাত্র শখের বসে। কারণ তিনি তেমন আগ্রহী ছিলেন না। তবে ওনার এক বোনের একটি প্রোফাইল ছিল বিয়েটাতে এবং তাঁর বিয়ের জন্য সবাই আগ্রহী ছিল। তাকে সহযোগিতা করার জন্য উনি নিজে প্রোফাইল খুলেছিলেন। “মনি” একদিন দেখলেন যে তাকে অনেকেই অনুরোধ পাঠিয়েছেন। কিন্তু তিনি খুব চিন্তা ভাবনা করে শুভ অনুরোধটি গ্রহণ করেন। যাদের পছন্দ হয়নি তাদের যোগাযোগের অনুরোধ গ্রহণ করেননি।
এরপর কথা বার্তা শুরু হয় শুভ এবং মনির মধ্যে। দুজনের পছন্দ ও অপছন্দের অনেক কিছুই মিলে যাবার পর তাড়া নিজ নিজ পরিবারকে জানায়। প্রথম দিকে উভয় পরিবারের কেউ সিরিয়াস ছিলনা। কিন্তু উভয়ের আগ্রহ দেখে পরিবারের সবাই ব্যপারটিকে গুরুত্ব দেয়। শুভর অফিসে একদিন দেখা করতে আসে মনির পরিবারের একজন। এরপর কথা শুরু পারিবারিকভাবে। উভয় পক্ষের মতামত এর ভিত্তিতে দেখাশুনা পর্ব শেষ করে একদিন তাদের বিয়ে হয়ে যায়। এরপর বিয়েটা থেকে বিদায় নেওয়ার পালা। বিয়েটা’তে একদিন লগ ইন করে একাউন্টস সেটিং অপশনে ক্লিক করে “একাউন্ট বন্ধ করুন” এ ক্লিক করেন আর এরপর মন্তব্য এর বক্সে বিয়েটার সুনাম করে বিদায় নেন এই শুভ এবং মনি দম্পতি।
এখন আমরা বিয়েটার এডমিন থেকে সফলভাবে পাত্র- পাত্রী খোঁজ করার জন্য কিছু পরামর্শ জানব-
পরামর্শ- ১ঃ আপনি যদি সত্যিকারে বিয়ের জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন তবেই কেবল রেজিস্ট্রেশন করুন অন্যথায় সময় নস্ট করবেন না। অন্যকে বিরক্ত করবেন না।
পরামর্শ-২ঃ রেজিস্ট্রেশন এর সময় একটু সময় নিয়ে ভালভাবে রেজিস্ট্রেশন করুন। ছবি, পিতার নাম, কর্মস্থল বা পেশা, শিক্ষ্যাগত যোগ্যতা, নিজের ঠিকানা ও পছন্দের ব্যাপারে স্পস্ট এবং সঠিক তথ্য দিবেন।
পরামর্শ-৩ঃ নিজের মোবাইল নাম্বার, মেইল আইডি ইত্যাদি যোগাযোগের যেকোন মাধ্যম অনিয়মভাবে প্রদান করবেন না।
পরামর্শ- ৪ঃ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনি পাত্র/ পাত্রীর প্রোফাইল দেখতে পারবেন। একইভাবে আপনার প্রোফাইলটিও যেসব পাত্র/ পাত্রীর পছন্দের সাথে মিলে যাবে তারা দেখতে পারবে।
পরামর্শ- ৫ঃ প্রতিদিন কিছু সময় দিন বিয়েটার ওয়েবসাইটে। যদি আপনি প্রতিদিন সময় না দেন তাহলে আপনার প্রোফাইলটি প্রথম পেজ থেকে ধীরে ধীরে সরে যাবে। অর্থাৎ কোন ইউজার প্রোফাইলে লগ ইন করলেই আর আপনার প্রোফাইল দেখতে পারবেনা। ঐ ইউজারকে আপনার প্রোফাইল দেখতে হলে আরও বেশি স্ক্রল করতে হবে।
পরামর্শ- ৬ঃ প্রথমে গোল্ড প্যাকেজটি নিলে ভালো হয়। কারণ ঐ প্যাকেজে ছয় মাস সময় পাওয়া যায় আর ৬০ জনকে যোগাযোগের অনুরোধ পাঠাতে পারবেন। আর এতে একটি ভাল সিদ্ধান্তে আপনি পৌঁছাতে পারবেন।
পরামর্শ- ৭ঃ কাউকে অনুরোধ পাঠানোর পুর্বে একটু চিন্তাভাবনা করুন। যদি ঐ ইউজার আপনার অনুরোধটি গ্রহণ করেন তখন কি করবেন? তার বিস্তারিত দেখার পরে যদি পিছিয়ে আসার সুস্পস্ট কারণ না থাকে, তাহলে পরবর্তী ধাপে যাবার দায়িত্ব কিন্তু আপনার রয়েই যায়।
পরামর্শ- ৮ঃ কারো অনুরোধ গ্রহণ করার ব্যাপারেও একটু চিন্তা ভাবনা করুন। যদি তাঁর তথ্য ঠিক থাকে তবে আপনার যদি অন্তত তার সাথে কথা বলা এবং দেখা করার মত মানসিকতা ও প্রস্তুতি থাকে তবেই তাঁর অনুরোধ গ্রহণ করবেন।
পরামর্শ- ৯ঃ কোন ইউজার এর সাথে প্রাথমিক পরিচয়ে যদি পজিটিভ মনে হয়, তাহলে নিজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানিয়ে দিন। ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়ে আরও পজিটিভ মনে হলে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিন অন্যথায় স্পস্ট ভাবে জানিয়ে দিবেন যে আমরা আর আপনার সাথে সম্পর্ক করতে আগ্রহী নই।
পরামর্শ- ১০ঃ বছর সময় নিলে ভাল হয়। তবে একেকজন এর প্রয়োজন একেক রকমও হতে পারে। আর দু-একটি পেমেন্ট করেই কোন ভাল রেজাল্ট না হলে আপগ্রেড করা বন্ধ করবেননা। কারণ বিয়ের পাত্র/ পাত্রী সিলেক্ট করতে আপনাকে সময় দিতে হবে, পাশাপাশি পেমেন্ট করে চেস্টাও চালিয়ে যেতে হবে।
পরামর্শ- ১১ঃ কাউকে অনুরোধ পাঠানোর পর রেসপন্স না পেলেও সবর করতে হবে। ইন্টারনেটের ব্যবহার অনেকেই ভালভাবে জানেন না। আবার পর্যাপ্ত নেট কানেকশন সব জায়গায় সবসময় থাকেনা। এছাড়া ব্যস্ততার কারণে সবাই ওয়েবসাইটে সময় দিতে পারেননা। এসব কারনে রেসপন্স না পেলে হতাশ হবেননা।
পরামর্শ- ১২ঃ বিদেশে বসবাসকারী পাত্র/ পাত্রী দেখতে চাইলে কি করবেন? হ্যাঁ বিদেশে বসবাসকারী পাত্র/ পাত্রী দেখতে চাইলে যেকোন ব্রাউজার দিয়ে বিয়েটার ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে। মোবাইল এর অ্যাপ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে লগ ইন করে দেশে/বিদেশে এর জায়গায় বিদেশ ক্লিক করবেন তাহলে যারা বিদেশে অবস্থান করছেন তাদের প্রোফাইল দেখতে পারবেন।
পরামর্শ- ১৩ঃ বিয়েটা ব্যবহার করে বিয়ে হয়ে গেলে পরবর্তীতে কোন পেমেন্ট করতে হবে না। অনেকেই মনে করেন যে বিয়েটার মাধ্যমে বিয়ে হয়ে গেলে পরে কি কোন পেমেন্ট করতেই হয় কিনা এই সন্দেহে বিয়ের পর অনেকেই একাউন্ট অফ করার সময় বিয়েটার মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে তা উল্লেখ করতে চাননা। অথচ, বিয়েটা’র মাধ্যমে বিয়ে হলে কোন পেমেন্ট করতে হয়না বরং বিয়েটা থেকে ঐ দম্পতিকে উপহার দেওয়া হয়।
পরামর্শ- ১৪ঃ কাউকে অনুরোধ পাঠানোর পুর্বে তাঁর প্রোফাইল দেখুন, সে কত দিন আগে লগ ইন করেছিল তা চেক করে দেখুন, তারপর অনুরোধ পাঠান।
আপনার নিজের কোন পরামর্শ থাকলে দয়া করে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।