বিয়ে কিভাবে আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে

আমাদের সমাজে যত নিয়ম-নীতি আছে বা সহজাত অভ্যাস আছে বিয়ে তার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম এবং সামাজিক বা ধর্মীয় রীতি।

বিয়ে আমাদের জীবনকে নানাভাবে সফলতার দিকে নিয়ে যায়। এজন্যই সারা দুনিয়ার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য রীতি হল বিয়ে।

বিয়ের বিভিন্ন ইতিবাচকদিক রয়েছে যা আমাদের জীবনকে সফলতার দিকে নিয়ে যায়-

১। বিয়ের মাধ্যমে জীবনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয় বিয়ে পরিবারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে

 একজন বিবাহিত মানুষের জীবনে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক পরিবর্তন আসে এই নিয়ম কানুন এর ব্যাপারে। যেমন বিবাহিত ব্যক্তি যেহেতু একে অপরের সাথে দায়িত্বের  বাঁধনে আবদ্ধ থাকে, তাই তারা যখন যা খুশি তাই করতে পারেনা। আর সেজন্য স্বামী স্ত্রী উভয়কে ঘুম, গোসল, খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ সহ, আত্বীয় স্বজনের সাথে আচার ব্যবহার প্রত্যেকটি বিষয়ে সচেতন হতে হয়। আর এভাবে বিয়ে মানুষকে শৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যায়।

 

 

২। শারীরিক শান্তি

বিয়ে আমাদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে

 বিয়ের মাধ্যমে ব্যক্তি জীবনে শারীরিক এক পরিবর্তন সাধিত হয়। শরীরের জৈবিক চাহিদা পুরণের ফলে শরীরের ভিতরের শান্তি অনুভব হতে থাকে। নিয়মিত জৈবিক চাহিদা পুরণ হওয়ার ফলে শারীরিক বহু ধরনের রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। যেমন, যারা বিবাহিত তাদের প্রস্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে যায়, এভাবে বিয়ে আমাদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। যারা সময়মত বিয়ে করেনা তাদের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩। মানসিক শান্তি 

বিয়ে আমাদেরকে মানসিক শান্তি দিয়ে থাকে

বিবাহিত মানুষ সাধারণত মানসিক ভাবে অনেক শান্তি লাভ করে। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অন্তরে এক ধরনণের ভালবাসা সৃষ্টি হয়, আবার স্বামীর অন্তরেও স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি হয়। এই ভালবাসা থেকে মানসিক এক ধরণেরর তৃপ্তি বা আনন্দের সৃষ্টি হয় যা মানসিক শান্তি বয়ে আনে। বিবাহিত পুরুষ কাজ শেষ করে ঘরে ফিরলে সুন্দর একটি পরিবেশ আশা করে  যে তার ঘর, বিছানা সহ সমস্ত পরিবেশ সুন্দর থাকবে। এর এই কাজটি কিন্তু তার স্ত্রী করে থাকে, ফলে ঘরে প্রবেশ করার সাথে সাথে একটি সুন্দর পরিবেশ দেখে মানসিক শান্তি লাভ করে থাকে।এভাবেও স্ত্রীও তার মনের সকল কথা স্বামীর কাছে বলার সুযোগ পায় ফলে তার মনেও এক ধরনের শান্তি অনুভুব হয়।এভাবে বিয়ে আমাদেরকে মানসিক শান্তি দিয়ে থাকে।

৪। বিয়ের পারিবারিক প্রভাব

বিয়েতে ব্যক্তিত্ব বিকশিত হয়বিয়ে পরিবারেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। বিয়ের মাধ্যমে বিবাহিত পুরুষ পরিবারে দায়িত্ব পালনে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে। পরিবারের যে সন্তান বিয়ে করে সে কাজে কর্মে, পরিবারের ভরন পোষনে স্বভাবতই অগ্রণী ভুমিকা পালন করে। কারণ সে তার স্ত্রীর ভরন পোষনের জন্য কর্মব্যস্ত হয়ে পরে। এই কর্মব্যস্ততার প্রভাব তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য এর উপরও পরে। অপরদিকে একজন মেয়ে যখন বিয়ে করে তখন তার ভিতরেও দায়িত্ব সচেতনতা বেড়ে যায়। নিজের স্বামীর প্রতি দায়িত্ব পালন তাকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতিও দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট করে তোলে। এভাবে বিয়ে আমাদের পারিবারিক জীবনে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

৫। শিশুর মানসিক বিকাশে বিয়ের প্রভাববিয়ে ও পারিবারিক জীবন

 শিশুর মানসিক বিকাশে ব্যাপক ভুমিকা পালন করে তার পরিবার। আর পরিবারের মুল উৎপত্তিস্থল হল বিয়ে। বিয়ের মাধ্যমে পরিবারে উৎপত্তি হয়। আর পরিবার থেকে একজন শিশু সকল ধরণের মানসিক বিকাশের সুযোগ পায়।পরিবার ব্যতিত যেমন শিশুর মানসিক বিকাশের ভালো পরিবেশ গড়া সম্ভব নয়, একইভাবে বিয়ে ব্যতিত ভালো পরিবার গড়া সম্ভব নয়।

৬। বিয়ের সামাজিক ইতিবাচক প্রভাব

বিবাহিত মানুষ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা পালন করে। বিবাহিত মানুষ নিজের জন্য, নিজের সন্তানের জন্য সামাজিক উন্নয়ন এর ব্যাপারে সচেতন থাকে। সমাজে যাতে খারাপ কাজ, খারাপ কোন সংগঠন না গড়ে উঠতে পারে সেজন্য একজন বিবাহিত ব্যক্তি অগ্রণী ভুমিকা পালন করে। একইভাবে- সমাজে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, শিশুদের জন্য খেলাধুলা, বিনোদনের ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট, বাজার ইত্যাদি যাতে গড়ে উঠে সেজন্যও একজন বিবাহিত ব্যক্তি ভুমিকা পালন করে।

৭। রাষ্ট্রে বিয়ের ইতিবাচক প্রভাব

রাষ্ট্র গঠনে বা রাষ্ট্রের পরিচালনার জন্য সু-শিক্ষিত, বিচক্ষণ, স্বাস্থ্যবান, মহান, সুবিচারক ব্যক্তিত্ব এর প্রয়োজন। এর ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সুন্দর পরিবার প্রয়োজন। পরিবারের সুশিক্ষা ব্যতীত এধরনের মানুষ বানানো খুবই কস্টকর। আর পরিবারের মুল ভিত্তি হল বিয়ে। বিয়ে সম্পর্কে আরও জানতে পড়তে পারেন এই ব্লগটি সফল দম্পতি হতে গড়ে তুলুন এই অভ্যেসগুলো

এভাবে বিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.