ডিভোর্স বলতে বুঝায় একটি সম্পর্কের ছিন্নকরণ। কেউই আসলে চায় না তার সুন্দর সম্পর্কটি নষ্ট হয়ে যাক। বিভিন্ন বিষয় আসলে এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে থাকে- হয়তো তাদের মধ্যকার ভালোবাসা আর থাকে না, হয়তো কোন সমস্যা থাকে না কিন্তু তারা সমঝোতা করে একসাথে থাকতেও চায় না ইত্যাদি। বাংলাদেশেও এখন ডিভোর্সের সংখ্যা বাড়ছে। ডিভোর্সের জন্য আসলে কাউকে এককভাবে দায়ী করা যায় না, উচিতও নয়। আমাদের সমাজে একজন ডিভোর্সি পুরুষ বা মহিলাকে খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না। এজন্য অনেকেই এখনও অপ্রীতিকর অথবা ক্ষতিকর সম্পর্ক থেকে বের হয়ে আসতে ভয় পায়। ডিভোর্স হয়ে গেলে জীবন শেষ হয়ে যায় না, জীবন তার নিজস্ব গতিতেই চলতে থাকবে। কিছু সময় পর হয়তো কাউকে পছন্দ হতে পারে এবং বিয়ের চিন্তাও আসে। ডিভোর্সের পর পুনরায় বিয়ের ক্ষেত্রে যে পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে তা হল-
১। দ্রুত সিদ্ধান্ত :
পুনরায় বিয়ের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো ঠিক নয়। এই সিদ্ধান্তের আগে অবশ্যই ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে কেন আসলে বিয়ে করতে চাচ্ছেন, বিয়ে করার সুবিধা এবং অসুবিধা কি হতে পারে এটাও বিবেচনায় আনতে হবে। তবে পুনরায় বিয়ের পূর্বে কমপক্ষে এক থেকে দুই বছর সময় নেয়া উচিত। অতীতের জন্য কখনও নিজেকে অথবা আপনার পূর্বের সঙ্গীকে দোষারোপ করা যাবে না। অতীতকে মেনে নিয়ে সামনে আগাতে হবে এবং সবাইকে ক্ষমা করে দিতে হবে এবং নিজের পূর্বেকার ভুল গুলো শুধরে নিতে হবে যাতে একই ভুলে আবার খেসারত দিতে না হয়। তাছাড়া নিজেকে পুনরায় বিয়ের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত করতেও কিছু সময় নেয়া প্রয়োজন।
২। সন্তানদের অগ্রাধিকার :
সন্তানদের কথা অবশ্যই আগে চিন্তা করতে হবে। তাদেরকে আলাদা করে বসিয়ে বোঝাতে হবে যে তারা আপনার কাছে সবসময় অগ্রাধিকার পাবে। তাদেকেও সময় দিতে হবে যেন আপনার নতুন জীবনের সাথে তারা খাপ খাইয়ে করতে পারে। তাদেরকে অবশ্যই আশ্বাস দিতে হবে যেন কোন অসুবিধা বোধ করলে আপনাকে অবগত করতে দ্বিধাবোধ না করে। এটাও মাথায় রাখতে হবে যে,আপনার নতুন সঙ্গী আপনার সন্তানকে আপনার মত ভালবাসতে নাও পারতে পারে এবং তাদের ঘনিষ্ঠ হতেও সময় লাগতে পারে। সুতরাং সব দিক বিবেচনা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
৩। যোগাযোগ ব্যবস্থা :
আপনার এবং আপনার নতুন সঙ্গীর সাথে যোগাযোগে যেন কোন ঘাটতি না থাকে। যত বেশি কথা আদান প্রদান করবেন তত আপনার জন্য নতুন জীবনের সাথে খাপ খাওয়াতে সহজ হবেএবং একে অন্যকে বুঝতে সুবিধা হবে।
৪। তুলনা :
অতীত দাম্পত্য জীবনের সাথে বর্তমান দাম্পত্য জীবন কখনও তুলনা করা যাবে না। তুলনা করলে আপনি কখনই নতুন জীবনে পুরোপুরি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কিংবা সুখী হতে পারবেন না। তবে খুব স্বাভাবিক ভাবেই এই তুলনার বিষয়টি মাথায় চলে আসে, কিন্তু তাকে হেয় করে কিছু বলা যাবে না ।এ নিয়ে আপনার সঙ্গী যেন কোনভাবে কষ্ট না পান সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫। অর্থনৈতিক অবস্থা :
পুনরায় বিয়ের পূর্বে অবশ্যই নিজেকে অর্থনৈতিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হতে হবে। এমন যেন না হয় যে আপনি পুনরায় বিয়ে করেছেন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দিক থেকে সাহায্য পাবার জন্য। কথায় আছে, “অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়”। অর্থ যদিও জীবনের সব কিছু নয়, তবে সাংসারিক জীবনে অর্থের অভাব জীবনকে অর্থহীন করে তুলতে পারে। তাই, নিজের মানসিকতা উন্নত করার সাথে সাথে আর্থিক সংগতির ব্যাপারেও যত্নবান হতে হবে।
বাস্তব সম্মত কথা ।