বিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ নেয়ামতের নাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত। ঈমানের পূর্ণতার সহায়ক। যুবক-যুবতীর চরিত্র গঠনের অন্যতম উপাদান। আদর্শ পরিবার গঠন, মানুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ এবং মানসিক প্রশান্তি লাভের প্রধান উপকরণ হচ্ছে বিয়ে, যা প্রত্যেক মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বিয়ে নিয়ে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। এসব আয়াত আমাদের জন্য বিয়ের ব্যপারে পথ প্রদর্শক। এই ব্লগে বিয়ে সম্পর্কিত কুরআন এর কয়েকটি আয়াত ও এর ফজিলত নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বিয়ে করায় উৎসাহিত করেছেন
বিয়ে একজন নারী বা পুরুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। বিয়ে ছাড়া আমাদের জীবন আনন্দময় হওয়া বা পরিপূর্ণতা লাভ করা কঠিন। তাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বিয়ে করতে উৎসাহিত করেছেন এবং আমরা যে বিয়ের মাধ্যমে শান্তি লাভ করতে পারবো সে কথাও বলেছেন।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন কারীমে এই প্রসঙ্গে বলেন,
“আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা রুম : আয়াত ২১)
স্বাুমী-স্ত্রী একে অপরের পরিপূরক। একজন ব্যতীত অন্য জনের চলা কষ্টকর। আর বিষয়টিকে বুঝানোর জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অন্যত্র বলেন,
“তারা (স্ত্রীগণ) তোমাদের পোশাক এবং তোমরা (স্বামীগণ) তাদের পোশাকস্বরূপ।” (সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)
বিয়ে মানুষকে স্বাবলম্বী ও সম্পদশালী করে তুলে
বিয়ের ক্ষেত্রে একজন পুরুষের জন্য আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া খুব জরুরী। কারণ বিয়ে সম্পর্কিত খরচ এবং বিয়ে পরবর্তী যত সাংসারিক ব্যয়ভার বহন করতে হবে তার সব কিছুই স্বামীর দায়িত্ব। এজন্য অনেক পুরুষই বিয়ের উপযুক্ত বয়স হওয়া সত্বেও সত্ত্বেও আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে চায় না বা বিয়ে করতে পারেনা। আর এসব কারণে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বিয়েও করতে বলেছেন এবং পাশাপাশি আর্থিক স্বাবলম্বী করে দেওয়ারও প্রতিশ্রতিও দিয়েছেন।
“তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে স্বচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যারা বিবাহে সমর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেন।” (সূরা নূর : আয়াত ৩২-৩৩)
অর্থাৎ যাদের বিয়ের সময় হয়েছে কিন্তু বিয়ে করছে না শুধু আর্থিক সমস্যার কারণে যদি তারা ন্যায়পরায়ণ হয় তাহলে মহান আল্লাহ তাদেরকে স্বচ্ছল করে দিবেন, কারণ তিনি বিরাট প্রাচুর্যের মালিক।
কাকে বিয়ে করা যাবেনা
একজন মুসলমান কাকে বিয়ে করতে পারবেনা সে বিষয়ে আল কুরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে।
“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকন্যা, ভগ্নিকন্যা, তোমাদের সে মাতা যারা তোমাদের স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু।” [সূরা নিসা : আয়াত ২৩]
স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিতে হবে খুশীমনে
স্ত্রীদেরকে মোহর দিয়ে বিয়ে করতে হবে, আর মোহর খুশি মনে আদায় করতে হবে। কিন্তু আমরা আমাদের দেশে কখনো কখনো এই বিষয়টি কাবিন নামাতেই থাকে। নগদ প্রদানের অভ্যাস খুব কম। কিন্তু মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই ব্যপারে স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে স্ত্রীদের মহরানা খুশি মনে দিয়ে দিতে হবে। মোহর আদায় প্রসঙ্গে আল কুরআনের আয়াত:
“আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” [সূরা নিসা : আয়াত ৪]
পুরুষদেরকে একটি বিয়ের জন্যই উৎসাহিত করেন তবে যোগ্যতা থাকলে দুটি বা চারটিও করতে পারবেন
“সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে একটিই, অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।” [সূরা নিসা : আয়াত ৩]
একজন পুরুষ কয়টি বিয়ে করতে পারবেন সে বিষয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে পবিত্র কুরআনুল কারীমে ভালভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি একটি বিয়ের ব্যপারে গুরুত্ব আরোপ করেছেন কিন্তু কেউ যদি দুটি বা তার অধিক চারটি পর্যন্ত বিয়ে করতে চায়, করতে পারবেন। তবে সকল স্ত্রীর প্রতি সমতা রক্ষা করতে হবে; যা খুবই কষ্টকর। সেক্ষেত্রে তিনি একটি বিয়ের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছেন।
পবিত্র কুরআনুল কারীমে বিয়ে সম্পর্কিত এসব আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে বিয়ের মত মানব জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন যা আমাদের জন্য খুবই জরুরী।
গুরুত্বপূর্ণ লিখা।
আমার মতামত হল বিয়ের পুর্বে প্রতিটি ছেলে এবং মেয়ের বিয়ে সম্পর্কে কোরআনের নির্দেশনা ভালো করে জেনে তারপর বিয়ে করা বা বিয়ে দেওয়া উচিত। ফলে সংসারে শান্তি দেবেন আল্লাহ পাক এবং সুসন্তান তৈরি করে দিবেন আল্লাহ।
আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
হেল্পলাইনঃ 01730332503, 01755690000
ওয়েবসাইটঃ http://www.biyeta.com
Thanks a lot.
Congratulations
ধন্যবাদ
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য
যাযাকাল্লাহু খায়ের
সত্যি বিয়ে নিয়ে অনেক পোষ্ট পড়েছি কিন্তু এই পোষ্ট এর মতো এতো ভালো লাগে নি….মাশআল্লাহ
আলহামদুলিল্লাহ শিক্ষা গ্রহণ করলাম