বিয়ের জন্য ইস্তেখারার দোয়া ও নিয়ম 

বিয়ের জন্য ইস্তেখারার দোয়া ও নিয়ম 

জীবনের কোন গুরুত্বপূর্ন ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর উপর ভরসা, সাহায্য পাওয়া ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুন্নাতি নিয়মকে ইস্তেখারা বলে। 

ইস্তেখারা একজন মুছলমানের জীবনে গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। বিয়ের জন্য ইস্তেখারা করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিয়ের জন্য ইস্তেখারার দোয়া ও নিয়ম সম্পর্কে এই লিখাটি পাবলিশ করা হল। 

 

প্রথমেই ইস্তেখারার দোয়া, ইস্তেখারার দোয়াটি নিম্নরূপঃ 

আরবী উচ্চারণসহ নিজে খুঁজে দেখে নিবেন। এখানে শুধু অর্থ প্রকাশ করলাম। 

অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট তোমার ইলমের সাথে মঙ্গল প্রার্থনা করছি। তোমার কুদরতের সাথে শক্তি প্রার্থনা করছি এবং তোমার বিরাট অনুগ্রহ থেকে ভিক্ষা যাচনা করছি। কেননা, তুমি শক্তি রাখ, আমি শক্তি রাখিনা। তুমি জান, আমি জানিনা এবং তুমি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। হে আল্লাহ! যদি তুমি এই কাজ আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের বিলম্বিত ও অবিলম্বিত পরিণামে ভালো জান, তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত ও সহজ করে দাও। অতঃপর তাতে আমার জন্য বরকত দান কর। আর যদি তুমি এই কাজ আমার জন্য আমার দ্বীন, দুনিয়া, জীবন এবং কাজের বিলম্বিত ও অবিলম্বিত পরিণামে মন্দ জান, তাহলে তা আমার নিকট থেকে ফিরিয়ে নাও এবং আমাকে ওর নিকট থেকে সরিয়ে দাও। আর যেখানেই হোক মঙ্গল আমার জন্য বাস্তবায়িত কর, অতঃপর তাতে আমার মনকে পরিতুষ্ট করে দাও।

ইস্তেখারা সম্পর্কে রাছুলুল্লাহ (সাঃ) এর মতামতঃ

 সা’আদ বিন আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূল (সাঃ) বলেন: বনী আদম তার রবের কাছে ইস্তেখারা (কল্যাণ প্রার্থনা) করাই তার সৌভাগ্যের বিষয়। বনী আদমের আরো সৌভাগ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌ তাআলা তার জন্য যা নির্ধারণ করেন তাতে সন্তুষ্টি থাকার মাধ্যমে। আর বনী আদমের দূর্ভাগ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌র নিকট ইস্তেখারা বন্ধ করে দেয়া এবং বনী আদমের আরো দূর্ভাগ্য হচ্ছে আল্লাহ্‌ তাআলা যা নির্ধারন করেছেন তাতে অসন্তুষ্ট হওয়া। (মুসনাদেআহমাদ)

 ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেন: যে ব্যক্তি সৃষ্টিকর্তার সাথে ইস্তেখারা করে এবং সৃষ্টির (মানুষের) সাথে পরামর্শ করে তার (প্রাপ্ত) বিষয়ে অটল থাকে সে কখনো লজ্জিত হয়না।

কোন বিষয়ে ইস্তেখারা করবেন:

রাসূল (সাঃ) সকল বিষয়েই ইস্তেখারা করতে উৎসাহ দিয়েছেন। কিন্তু অলসতা ও গুরুত্ব না দেয়া ইত্যাদি মানবীয় কারণে ইস্তেখারা করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়ে উঠেনা। তাই অন্ততঃ নিজের জীবনের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ইস্তেখারা করা প্রয়োজন। 

যেমন আপনার বিদেশ যাওয়া, নিদিষ্ট কোন চাকুরীতে যোগদান, কারো সাথে ব্যবসা, কারো সাথে আপনার বিবাহ, কাউকে কোন পরামর্শ দেয়া, কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইত্যাদি। 

ইস্তেখারা কারা করবেন?

প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের প্রয়োজনে সে নিজেই ইস্তেখারা করবে।

ব্যক্তির সিদ্ধান্তের সাথে পরিবারের সদস্য, অভিভাবক, আত্নীয় স্বজন এধরণের যারা সম্পৃক্ত তারাও সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যপারে ইস্তেখারা করতে পারেন। কারণ যারা সিদ্ধান্ত নিবেন তিনি যেহেতু তাদের একজন তাই তার সিদ্ধান্ত দেয়ার ব্যপারেও তিনি ইস্তেখারা করবেন।

 

আপনি যদি একবার ইস্তেখারার রেজাল্ট পান তাহলেই আপনি এর স্বাদ আস্বাদন করবেন এবং এর পর যে কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজেই ইস্তেখারা করতে আপনার মন চাইবে। ইস্তেখারার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র সাথে বান্দার সম্পর্ক নিবিড় হয় এবং ঈমান ও তাওয়াক্কুল বেড়ে যায়। 

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করবে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হবেন।” (সূরা ত্বলাক)

এই ইস্তেখারার সুফল একেবারেই নিশ্চিত। তাই আমাদের উচিৎ বিয়ের মতন গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্তে ইস্তেখারা করা। 

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে জীবনের সকল গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে ইস্তেখারা করার তোফিক দান করুন-আমিন। 

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.