বিয়ে মানেই অনেক লম্বা নিয়ম কানুন। বাংলাদেশে বিয়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত রীতির মধ্যে একটি হল, অনেক লোকজন সাথে নিয়ে গিয়ে মেয়ে দেখতে হবে। মাহরাম বা গায়রে মাহরাম এর কোন বাছ বিচার না করে মেয়েকে সবার সামনে দেখতে হবে। তারপর যৌতুক এবং মোহরনা নিয়ে লম্বা আলোচনা হবে। এরপর কয়েকবার দেখা সাক্ষাৎ ও আলোচনার পর অনেক বড় আকারে খরচ করতে হবে ইত্যাদি। অথচ ইসলাম বিয়েকে এত সহজ করে দিয়েছিল যে মুহুর্তের মধ্যে বিয়ে হয়ে যেত। বর্তমানে বিয়ে কঠিন হচ্ছে ফলে জিনা, ব্যভিচার বেড়ে যাচ্ছে।
আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগের একটি সহজ মহরানা আদায়ের মাধ্যমে অর্থাৎ কুরআনের আয়াত কে মহরানা হিসাবে নিয়ে একটি বিয়ের ঘটনা আলোচনা করা হলঃ
সাহল (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, একজন মহিলা এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে নিজেকে পেশ করলেন।
এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দিন।
তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার কাছে কী আছে?
সে উত্তর দিল, আমার কাছে কিছুই নেই।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যাও, তালাশ কর, কোন কিছু পাও কিনা? দেখ যদি একটি লোহার আংটিও পাও।
লোকটি চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল, কিছুই পেলাম না এমনকি একটি লোহার আংটিও না; কিন্তু আমার এ তহবন্দখানা আছে। এর অর্ধেকাংশ তার জন্য।
অতএব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার তহবন্দ দিয়ে সে কী করবে?
যদি তুমি এটা পরিধান কর, মহিলার শরীরে কিছুই থাকবে না, আর যদি এটা সে পরে তবে তোমার শরীরে কিছুই থাকবে না।
এরপর লোকটি অনেকক্ষণ বসে রইল।
এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চলে যেতে দেখে ডাকলেন বা তাকে ডাকানো হল এবং বললেন, তুমি কুরআন কতটুকু জান?
সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মুখস্থ আছে এবং সে সূরা গুলোর নাম উল্লেখ করল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার বিনিময়ে তোমাকে এর সঙ্গে বিয়ে দিলাম।
বর্তমান যামানায় বিয়ের ক্ষেত্রে এসব সুন্নাহ চালু করার জন্য আমাদের খুব চেষ্টা করা উচিৎ। আসুন আমরা যে যেখানে থাকি সেখান থেকেই এসব সহজ বিয়ের নিয়মকে মানার এবং সমাজে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করি।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে এসব সুন্নাহ মেনে চলার দান করুন।
তাওহীদ প্রকাশনী- ৫১১৩ নং হাদিস