ছেলের বয়স ২৩, ছেলেকে বিয়ে দিচ্ছেন না, কারন আপনার ধারনা ছেলে এখনও ছোট। আপনার কাছে ছেলে অবশ্যই ছোট। কিন্তু সে নিজে জানে, সে আসলে কতটা বড় হয়ে গেছে। সে এটা আপনাকে বিস্তারিত বলতে পারে না। বলতে গেলে আপনার চাইতে সেই লজ্জা বেশি পাবে। আপনি বলতে পারেন ছেলের বিবাহের উপযুক্ত সময় হয় নি, বিয়ে করলে বউকে খাওয়াবে কি? প্রশ্ন হচ্ছে, যে মেয়েটাকে সে এখন বিয়ে করার কথা ভাবছে, সে কি তাহলে এত বছর না খেয়ে ছিল? বিয়ে যদি আরও পাঁচ বছর পরও হয়, মেয়ে কি না খেয়ে থাকবে? মেয়ে যদি বিয়ে ছাড়া কোনভাবেই না খেয়ে না থাকে তাহলে শুধু বিয়েটা পড়ানোর পরেই কেন খাওয়ার চিন্তা আসবে? মেয়ে তার বাপের কাছে থাকুক, ছেলের যখন সামর্থ্য হবে মেয়েকে নিয়ে আসবে নিজের কাছে।
এখন দেখা যাক এর সুবিধা, অসুবিধা গুলো
সুবিধা
১. ছেলের জীবনে টেনশন জাস্ট অর্ধেক হয়ে যাবে। তার বিয়ে হয়েছে মানে তার “পছন্দের মানুষটি তার হয়ে গেল। রোজ রোজ এই দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
২. বিয়ের পরে মানুষ গোছালো হয়। এই বয়সের ছেলেরা অত্যন্ত অগোছালো হয়ে অপেক্ষায় থাকে কেউ একজন এসে তার জীবনটাকে গুছিয়ে দিয়ে যাবে ভেবে। একজন স্ত্রী ছাড়া কোন গার্লফ্রেন্ডের পক্ষে এটা সম্ভব না।
৩. ডেটিংয়ের পেছনে যা খরচ হত, তা দিয়ে তারা দুজন বিয়ের পর দিব্যি প্রেম করে যেতে পারবে, কারও গুনাহ হবে না।
৪. পর্ন নামক জিনিসটার বাজারদরে ভাটার টান পড়বে। মুসলিম দেশগুলাতে পর্নের এত রমরমা কাটতির কারন কি জানেন? মুসলিমদের জন্য এক্সট্রা ম্যারিটাল সেক্স নিষিদ্ধ। তরুন বয়সীরা যখন জৈবিক চাহিদা বৈধ ভাবে মেটানোর সুযোগ না পায়, তখন তারা আলটিমেটলি বিকৃত উপায়ের দিকে আরও বেশি ঝুকতে থাকে। এই জিনিস কোনক্রমেই আপনি রুখতে পারবেন না। এগুলো হল একটা পানির স্রোতের মত, কোননা কোন দিকে তা গড়াবেই।
৫. আপনি নিজে স্ট্রেস ফ্রি থাকবেন। ছেলে কই কার সাথে কি করছে তা দেখার ভারটা ছেলের বউই তখন নিতে পারবে।
৬. ছেলে ও মেয়ে দুজনেই তখন স্যাক্রিফাইস করা শিখবে। এই শিক্ষাটা না থাকায় এখন দিনকে দিন মানুষের জীবন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
অসুবিধা
১. কিছু পয়সা পাতি খরচ হতে পারে।
২. লোকে বদনাম করতে পারে।
৩. ছেলে-মেয়ে দুজনেই ৬-৮ মাস পড়াশোনাতে একটু ঢিল দিতে পারে।
৪. আপনি যদি মোবাইল কোম্পানির মালিক হন তাহলে এটা আপনার ব্যবসার জন্য ক্ষতিকর।
৫. যদি আপনি পর্ন ইন্ডাস্ট্রির মালিক হন তাইলে এটা আপনার জন্য ক্ষতিকর।
৬. ছেলে হয়তো পুরোপুরি আপনার কন্ট্রোলে নাও থাকতে পারে। এটা নির্ভর করে ছেলের ব্যক্তিত্বের ওপর। সারা জীবন তাকে কি শিখালেন তার ওপর। যদি পুরুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন তো কিভাবে বউ-মা দুজনকে এক সাথে নিয়ন্ত্রন করতে হয় সেটা সে দেখবে, যদি আপনারা ঠিক থাকতে চান।
এখন আমাদের অভিভাবকদের এই মেসেজটা দেয়ার সময় হয়েছে, তারা ঠিক করুক তারা কি চায়। তারা যদি চায় আগামী পাঁচ ছয় বছর ছেলে দিনে ডেট আর রাতে মাস্টার বেট করে কাটাক এবং মানসিক বিকৃতির শিকার হোক, তবু সমাজের চোখে তার মুখ রক্ষা করুক, তবে তারা আগের সিদ্ধান্তেই অটল থাকতে পারেন।
যদি তা না চান, তবে একটু সাহস করে আল্লাহর ওপর ভরসা করে বিবাহের উপযুক্ত সময় এলে বিয়েটা করিয়ে দিতে পারেন। ছেলে-মেয়ে সবাই এখন রোজগার করতে পারে। বিয়ে করার কারনে কেউ না খেয়ে মরবে না। মোস্ট ইম্পর্ট্যান্টলি, দুজন তখন প্রেমের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্ত হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ক্যারিয়ারের হিসেবটা কষতে পারবে, একজন আরেকজনকে আরও বেশি সময় দিতে পারবে সবকিছু ঠিক রেখেই এবং তাতে আপনার হার্ট অ্যাটাক হবার কোন সম্ভাবনা থাকবে না কারন আপনি জানেন আপনার ছেলে/মেয়ে তার স্ত্রী বা স্বামীর সাথেই আছে। আশা করি ফ্যামিলি লেভেলে ডিসিশন নেবার সময় কথাগুলো একবার ভেবে দেখবেন। একটু ভেবে দেখেন, এই বয়সে আপনার ডিসিশনের কারনে বিয়ে না করে যে ছেলেটা বা মেয়েটা বছরের পরবছর ধরে গুনাহ করে যাবে, এগুলোর হিসাব আপনাকেই হাশরের ময়দানে চুকাতে হবে।
কিন্ত এগুলোতো বাবা মা বোঝে না। আবার সন্তান হিসেবে বলতেও পারিনা।
বরং নিজেরা নিজেদের পাপ বাড়াচ্ছে বাবা মায়েরা
আমার মনে হয় এ ব্যাপারে সচেতন করার জন্য
সরকারী কোনো সংস্থার প্রয়োজন এবং গ্রাম পর্যায়ে অভিভাবকদের বোঝানো উচিত। কেননা শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ অনেক অসচেতন।
হুম ঠিক বলেছেন, কিন্তু তাদের সঠিকভাবে বুজিয়ে বলা আপনার দায়িত্ব।